“খেলায় আপস অ্যান্ড ডাউনস থাকবেই”
ঈদ উদযাপন করতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এখন অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। রোববার নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাকিব। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন তিনি।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে ভরাডুবি ঘটেছে বাংলাদেশ দলের। বাংলাদেশের ক্রিকেটের চেয়ে আফগানিস্তানের ক্রিকেট অনেক নবীন হলেও তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশকে তারা হারিয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। এতে সমর্থকদের অনেকেরই মন খারাপ। তবে সাকিব এসবকে দেখছেন স্বাভাবিক ‘স্রোত’ হিসেবেই।
সাকিব বলেন-
Also Read - প্রবাসীদের সাথে সাকিবের ঈদ আড্ডা‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভালো করছে, আবার মাঝে মধ্যে খারাপও করছে। খেলায় আপস অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। তবে ভালো করলে প্রশংসা, আর খারাপ করলে সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক।’
পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে আছেন সাকিবের অনেক ভক্ত ও সমর্থক। তবে তার নিন্দুক বা সমালোচকের সংখ্যাও কম নয়। তবে সাকিব জানান, সমালোচনা তার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করে। সেই সাথে আলাপকালে আগামী বিশ্বকাপে ভালো করার প্রত্যয়ও শোনা যায় তার কণ্ঠে, ‘আমি সমালোচনাকে সবসময় অনুপ্রেরণা হিসাবে গ্রহণ করি। আগামী বছর বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সেই বিশ্বকাপে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে ভালো করার।’
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপি থেকে উঠে এসে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার- সাকিব আল হাসান যতই চেষ্টা করুন না কেন (আদৌ করে থাকলে); কখনই ভুলতে পারবেন না বিকেএসপিকে। সেই বিকেএসপি নিয়ে তিনি জানালেন তার স্বপ্ন ও ভাবনার কথা, ‘আমি যদি কখনও বিকেএসপির হাল ধরি, তাহলে নিজের স্বপ্নের মতো করে সবকিছু করার চেষ্টা করব। তখন দেখবেন প্রতি বছরই বিকেএসপি থেকে জাতীয় টিমের খেলোয়াড় তৈরি হবে। তৃণমূল থেকে উঠে আসবে সেরা খেলোয়াড়। এটি সময়ের ব্যাপার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি যেহেতু বছরের অধিকাংশ সময়ই বাংলাদেশের বাইরে থাকি, সেজন্যে নিজের মতো করে করতে পারব না বলে সে চিন্তা আমার মাথায় আপাতত নেই।‘
সাকিব-কন্যা আলায়না হাসান অব্রিও বাবা-মায়ের স্পর্শে বনে গেছে রীতিমত তারকা। প্রবাসীদের সম্মুখে সাকিবকে মোকাবেলা করতে হল কন্যা সংক্রান্ত প্রশ্নও। সম্প্রতি দেশের জন্য অভাবনীয় সাফল্য বয়ে এনেছেন নারী ক্রিকেটাররা। নিজের মেয়েকে ক্রিকেটার বানাতে চান কি না, এমন প্রশ্নে জবাবে সাকিব বলেন, ‘সে তো আমেরিকান। এখানে ওর যা ভালো লাগবে, তাই করবে। আমি কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।’
ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্য কোনো সেক্টরে মনোযোগ দিতে চান কি না, এমন প্রসঙ্গে সাকিব দেন কৌশলী জবাব। তার ভাষ্য, ‘এখন আমি ক্রিকেট নিয়ে ভাবছি। আর ভবিষ্যতের কথা কেউ বলতে পারে না। ভবিষ্যতই বলে দেবে আমি কী করব। আমি ভাবিনি ক্রিকেটার হব। ছোট বেলায় ক্রিকেটের প্রতি আমার ফোকাস ছিল না। প্রতি বছর আমার স্বপ্ন পরিবর্তন হতো। কখনো মনে করতাম ডাক্তার, আবার ভাবতাম ইঞ্জিনিয়ার, আবার মনে করতাম ফুটবলার হব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটারই হয়ে গেলাম।’
ভবিষ্যতে রাজনীতিতে জড়াতে চান কি না এই প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে আড্ডায় বসেছি। তাই এসব (প্রসঙ্গ) পরিহার করাই শ্রেয়’।
এদিকে চলছে ফুটবল বিশ্বকাপের মৌসুম। ক্রিকেটের চেয়ে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিচারে একটু বেশিই। সেই বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ফুটবল যে পিছিয়ে আছে অনেক পথ! ক্রিকেটের মত কেন ফুটবলে উন্নতি করতে পারছে না বাংলাদেশ- এমন জিজ্ঞাসায় সাকিবের উত্তর- ‘আমি তো ফুটবল জগতের লোক নই। তাই স্পষ্ট করে কিছু বলাও সমীচীন নয়। তবে ফুটবলের প্রতিও বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের আগ্রহ রয়েছে, ভালোবাসা রয়েছে। নিশ্চয়ই বাফুফে (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) সচেষ্ট রয়েছে ফুটবলকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরব করতে।’
আরও পড়ুনঃ ছিটকে গেলেন ওকস এবং স্টোকস