আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিধস্ত জিম্বাবুয়ে

প্রকাশিত হয়েছে - 2018-02-20T08:34:05+06:00
আপডেট হয়েছে - 2018-02-20T11:58:00+06:00
সিরিজের শেষ এবং পঞ্চম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। ব্যাটিংয়ে জাভেদ আহমাদি এবং রহমত শাহ'র জোড়া অর্ধশতকে লড়াকু পুঁজি পায় আফগানরা। বোলিংয়ে দ্রুত উইকেট শিকার করে ৯৫ রানেই গুটিয়ে দেয় জিম্বাবুয়েকে। ১৪৬ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই উজ্জ্বল ছিলেন রাশিদ খান এবং শারাফউদ্দিন আশরাফ।
[caption id="attachment_41191" align="aligncenter" width="845"]

৪৩ রানের ইনিংসের পথে রাশিদ। ছবি : আইসিসি
[/caption]
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনার মিলে সূচনা করেন মন্থর গতিতে। ধীরলয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আফগানিস্তানের ইনিংস। ষষ্ঠ ওভারে আফগানিস্তানের ১৩ রানের সময় জিম্বাবুয়েকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ব্লেসিং মুজারাবানি। এ ডানহাতি পেসারের বলে ওয়ালারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মোহাম্মদ শেহজাদ। ১৪ বলে মাত্র ২ রান করেন তিনি।
ওপেনার জাভেদ আহমাদি এবং রহমত শাহ মিলে হাল ধরেন। দুজন ১২৯ রান যোগ করেন। শুরুতেই ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদকে হারানোর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান এ দুই ব্যাটসম্যান। দুজনই পূর্ণ করেন অর্ধশতক। ৫ চারে ৭৫ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন রহমত শাহ। তাকে ফিরিয়ে দেন সিকান্দার রাজা।
রহমত শাহের বিদায়ের পর হঠাৎ ধস নামে আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে। ৬ চার এবং ২ ছক্কায় সাজানো ৮৭ বলে ৭৬ রান করে রান আউট হয়ে বিদায় নেন রহমত শাহ। ঐ ওভারে গ্রায়েম ক্রিমার ফিরিয়ে দেন আফগান অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাইকে। মাত্র ২ রান করেন তিনি। দুই ওভার পরে নাসির জামাল (৭) শিকার হন সিকান্দার রাজার। ৩১ বল ক্রিজে টিকে থাকলেও মাত্র ৫ রান করে সামিউল্লাহ শেনওয়ারি প্যাভিলিয়নে ফিরেন টেন্ডাই চাতারার বলে। টিকতে পারেননি মোহাম্মদ নবীও। ৭ রান করে টেন্ডাই চিসোরোর বলে ক্যাচ দেন আর্ভিনের কাছে।
১৪২ রানে এক উইকেট থেকে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৭৭ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায় আফগানিস্তানের। বিপদে পড়া আফগানিস্তানকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিতে সাহায্য করে শারাফউদ্দিন আশরাফ এবং রাশিদ খানের জুটি। অষ্ঠম উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ৫১ রানের জুটি। ১ চার এবং ১ ছক্কায় ৩০ বলে ২১ রান করেন শারাফউদ্দিন আশরাফ। ইনিংসের শেষ বলে মুজারাবানির শিকার হওয়া রাশিদ খান খেলেন ২৯ বলে ৪৩ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল তিন চার এবং তিন ছক্কা। টেল এন্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় ২৪১ রান করে আফগানিস্তান।
বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ের হয়ে দুইটি করে উইকেট শিকার করেন চাতারা, মুজারাবানি এবং সিকান্দার রাজা।
২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং তারিসাই মুসাকান্দার শুরুতে দৃঢ়তার আভাস দিলেও এ জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে মাসাকাদজা ১০ বলে ৭ রান করে রান আউট হন। বেশিক্ষণ টিকেননি মুসাকান্দাও। দলীয় ২৬ রানের মাথায় শাপুর জাদরানের বলে জাভেদ আহমাদিকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। ১১ রান করেন মুসাকান্দা।
এরপর ব্রেন্ডন টেইলর এবং ক্রেইগ আর্ভিন হাল ধরেন জিম্বাবুয়ের। ৪৬ রানের জুটি গড়েন দুজন। ব্রেন্ড্ন টেলরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার শারাফউদ্দিন, টেলর করেন ২৭ রান। এ জুটির পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং। টেলরকে ফেরানোর পর নিজের পরের ওভারেই শারাফউদ্দিন বোল্ড করেন সিকান্দার রাজাকে। মাত্র ১ রান করেন রাজা।
পরের ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট নেন মোহাম্মদ নবী। ম্যালকম ওয়ালার এবং সলোমন মায়ার- দুই ব্যাটসম্যান বিদায় নেন রানের খাতা খোলার আগেই।
দলীয় ৯৫ রানের মাথায় ফিরে যান আর্ভিন। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৪ রান করে মুজিবের বলে বোল্ড হন আর্ভিন। এরপর আর কোনো রান তুলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। কোনো রান না করেই শেষ চার উইকেট হারায় তারা। জিম্বাবুয়ের লেজ গুটিয়ে দেন লেগ স্পিনার রাশিদ খান। আর্ভিনের বিদায়ের পরের ওভারে এলবিডব্লিউ করেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রিমারকে, ৮ রান করেন ক্রিমার। ঐ ওভারে ফেরান টেন্ডাই চাতারাকেও। নিজের পরের ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ইতি টানেন রাশিদ।
মাত্র ৯৫ রান করেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। চারজন ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজ আগেই নিশ্চিত করেছিল আফগানিস্তান। শেষ ম্যাচ জিতে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল আফগানরা।
বিডিক্রিকটাইম এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান ২৪১/৯, ৫০ ওভার
জাভেদ ৭৬, রহমত শাহ ৫৯, রাশিদ ৪৩, শারাফউদ্দিন ২১
রাজা ২/৪১, চাতারা ২/৪২, মুজারাবানি ২/৪৪
জিম্বাবুয়ে ৯৫, অলআউট, ৩২.১ ওভার
আর্ভিন ৩৪, টেলর ২৭, মুসাকান্দা ১১, ক্রিমার ৮
রাশিদ ৩/১৩, শারাফউদ্দিন ২/১৫, মোহাম্মদ নবী ২/২৬
ম্যাচসেরাঃ শারাফউদ্দিন আশরাফ