৬ মাসেও পরিশোধ হয়নি অলকদের বকেয়া

Siam ChowdhuryEditor
প্রকাশিত হয়েছে - 2018-08-19T19:32:15+06:00
আপডেট হয়েছে - 2018-08-19T20:17:12+06:00
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সর্বশেষ আসরে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলেছিলেন অলক কাপালি। প্লেয়ার্স বাই চয়েজ পদ্ধতির আসরে ছিলেন দলটির অধিনায়কও। লিগ শেষ হওয়ার মাসখানেকের মধ্যে পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা থাকলেও অলক এখনও পাননি বকেয়া টাকা। শুধু অলকই নন, একই অবস্থা ২০১৭-১৮ মৌসুমে ব্রাদার্সের হয়ে খেলা সব ক্রিকেটারেরই।

অনেকটা বাধ্য হয়েই রোববার বিসিবির কাছে অভিযোগ জানাতে জড়ো হয়েছিলেন ব্রাদার্সের বেতন না পাওয়া ক্রিকেটাররা। যদিও আসল অনুযোগ ছিল ক্রিকেটারদের মঙ্গলের জন্য গড়া সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতি। কেননা এর আগে বিসিবির কাছে বিচার জানিয়েও যে লাভ হয়নি!
জানা গেছে, প্লেয়ার্স বাই চয়েজ পদ্ধতি আবির্ভাবের পর সিসিডিএম নিয়ম করেছিল, আসর শুরুর আগেই খেলোয়াড়দের অর্ধেক পারিশ্রমিক, আসর চলাকালে ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক এবং আসর শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে বাকি ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে হবে। বাকি দলগুলো নিয়ম মানলেও মানেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ক্লাবের সব খেলোয়াড়ের টাকাই এখনও রয়ে গেছে বকেয়া।
অলকরা তাই দলবেঁধে এসেছিলেন কোয়াবের কাছে সমাধান খুঁজতে। সেই সাথে আবারও অভিযোগ দাখিল করে গেলেন বোর্ডের কাছে।
অলক জানান, নির্ধারিত সময়ে পাওনা পরিশোধ না করা হলে রোজার ঈদের আগে পরিশোধের অঙ্গীকার করেছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষও। তিনি বলেন,
‘সাধারণত লিগ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে আমাদের স্যালারি দিয়ে দেওয়া হয়। আমরা সেভাবেই যোগাযোগ করেছি ব্রাদার্স ইউনিয়নের সাথে, শেষে বলেছিল রোজার ঈদের আগে দেবে। এরপরে ঈদ শেষ হয়ে গেল। এরপরে আর তারিখ দেয়নি কেউ।’
বিডিক্রিকটাইম এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
প্রতিশ্রুতি রক্ষা না হওয়ায় আবারও ব্রাদার্সের সাথে খেলোয়াড়রা যোগাযোগ করলে তখন জানানো হয়, কোরবানির ঈদের আগেই বেতন পরিশোধ করা হবে। কিন্তু রক্ষা করা হয়নি সেই প্রতিশ্রুতিও। অলক বলেন,
‘আবার ওরা বলেছে কোরবানি ঈদের আগে স্যালারি দেবে। কিন্তু আজকে শেষ কর্মদিবস। আজকেও ওদের কোন খোঁজ নেই। তারপর বাধ্য হয়ে আমরা কোয়াবের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এখন ওরা বলছে সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের স্যালারি দেবে।’
ব্রাদার্সের এই হেয়ালিপনা নিয়ে যে এখন তোড়জোড় করা হচ্ছে, এমনটিও নয়। বোর্ডের বড় কর্তাদের কাছে পর্যন্ত ঝামেলা মেটানোর জন্য ধর্না দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। তাতেও কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি বলে জানান অলক,
‘ব্রাদার্স ইউনিয়নের এই ইস্যু নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে এবং সিসিডিএমের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট বোর্ডকে দুটো চিঠি দেওয়া হয়েছে। একমাস আগে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তার আগে আরেকটি। কিন্তু এখনো ওদের পেমেন্ট ক্লিয়ার হয়নি, এই বিষয়টি দুঃখজনক।’
ক্লাব ক্রিকেটে ব্রাদার্স ইউনিয়ন বড় এক নামই। এমন দলের কাছ থেকে এমন অপেশাদার আচরণ মেনে নিতে পারছেন না কেউই। এছাড়াও দলে ছিলেন বেশ কজন ক্রিকেটার যারা একসময় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। অলক কাপালি ছাড়াও দলের অংশ ছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকীর মত অভিজ্ঞ এবং কাজী অনিকের মত তরুণ ক্রিকেটাররা। তাদের সাথে এমন আচরণে ক্ষুব্ধ কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালও।
তিনি বলেন,
‘অলক কাপালি একজন টেস্ট ক্রিকেটার। সে যখন ঈদের আগে এসে মিডিয়ার সামনে এসব নিয়ে কথা বলে সেটা অবশ্যই সবার জন্য হতাশাজনক। শুধুমাত্র কোয়াবের জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে আমার জন্য না, পুরো কোয়াব কমিটির জন্যই বিষয়টি হতাশাজনক।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ বা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সর্বশেষ আসরে অবশ্য খুব একটা সন্তোষজনক ছিল না ব্রাদার্স ইউনিয়নের পারফরম্যান্স। দল গঠনের প্রক্রিয়া বদলে যাওয়ায় সেবার শক্তিশালী স্কোয়াডই তৈরি করতে পারেনি বিগত আসরগুলোতে ভালোই লড়াই করা ক্লাবটি। যার ফলস্বরূপ ১২ দলের টুর্নামেন্টে ১০ম হয়ে শেষ করতে হয় লিগ। কোনোমতে রেলিগেশন এড়ানো গেলেও এবার ক্লাবটি পড়েছে অপেশাদারিত্বের লজ্জায়।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছে ‘এ’ দল